ছোটবেলা থেকেই আল ইমরান নতুন কিছু শেখার প্রতি খুব আগ্রহী ছিলেন। যখনই তিনি কিছু খুঁজে পেতেন, তিনি তা নিয়ে গবেষণা করতেন। ভূগোল এবং পরিবেশ বিজ্ঞানে তার পড়াশোনা মহাকাশ গবেষণায় তার আগ্রহের দিকে পরিচালিত করে। এই আগ্রহ অবশেষে তাকে ইউএস ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (নাসা) জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরি (জেপিএল) এর একজন গবেষক করে তোলে।
ইমরানের (৩৩) বাড়ি নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার পশ্চিম রামপুরে। তার বাবা অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম এবং মা মাহমুদা খাতুন একজন গৃহিণী। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে ইমরান তৃতীয়।
ইমরান ২০০৪ সালে খিদিরপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞানে ৩.৫৭ পয়েন্ট নিয়ে পাস করেন। পরে খিদিরপুর কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে ২০০৬ সালে বিজ্ঞান বিভাগে ৪.৪ পয়েন্ট পেয়ে পাস করেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) পড়তে চেয়েছিলেন ইমরান। কিন্তু নম্বর কম হওয়ায় তিনি ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারেননি। পরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যা বিভাগে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান।
কিন্তু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েও কোনো ক্লাস নেননি। পরের বছরই ইমরান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। অনার্স ও মাস্টার্স উভয় পরীক্ষায় তিনি প্রথম হন। অনার্সে তার সিজিপিএ ৩.৬৯ এবং মাস্টার্সে ৩.৯৭।
ইমরানের পরিকল্পনা ছিল অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগ দান করবেন। এ জন্য তিনি একাধিকবার আবেদন করলেও তাকে কখনো নিয়োগের জন্য বিবেচনা করা হয়নি। পরে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগে প্রায় এক বছর অধ্যাপনা করেন।
পরবর্তীতে ২০১৭ সালে, ইমরান উচ্চ শিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামার অবার্ন ইউনিভার্সিটিতে প্ল্যানেটারি জিওসায়েন্সে মাস্টার্স করেছেন এবিং সেখানে তিনি পূর্ণ সিজিপিএ-৪ অর্জন করেছেন। এর পরে, ২০২২ সালে, ইমরান আরকানসাস বিশ্ববিদ্যালয়ে মহাকাশ ও গ্রহ বিজ্ঞানে পিএইচডি করেন। তার পিএইচডির শেষের দিকে, ইমরান জেপিএল-এ একজন পোস্ট-ডক্টরাল ফেলোর জন্য একটি বিজ্ঞপ্তি দেখেছিলেন এবং সেখানে তিনি আবেদন করেন। অবশেষে, তিনি তার যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন এবং মার্কিন জাতীয় অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (NASA)-এর জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরিতে (JPL) যোগদান করেছেন।
0 comments: